কাতারের আমিরের ঢাকা সফর: কী প্রত্যাশা প্রবাসীদের

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফর করে গেলেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। তার এই দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরকে ঘিরে আগ্রহের কমতি ছিলো না কাতার প্রবাসী বাংলাদেশিদের।

সোম থেকে মঙ্গলবার প্রায় ২২ ঘণ্টার রাষ্ট্রীয় সফর শেষে যাবার আগে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের আশা যেমন ব্যক্ত করেছেন, তেমনি ব্যবসা ও বিনিয়োগ নিয়ে দুদেশের মধ্যে ১০টি চুক্তি ও সমঝোতা সই হয়েছে তার উপস্থিতিতে।

কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর

মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের জনসংখ্যার মাত্র ১০ শতাংশ কাতারি নাগরিক, প্রায় ৯০ শতাংশ অভিবাসী। বলা চলে, অভিবাসীরাই কাতারের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।

কাতারে প্রায় চার লাখ বাংলাদেশির বসবাস, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশ।

দোহায় বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান ‘ইউরওয়ে ট্রাভেলস’ এর মালিক নরসিংদীর শফিউল্লাহ মুন্সী। কাতারের আমিরের ঢাকা সফরে তার উচ্ছ্বাস থাকলেও একজন প্রবাসী হিসেবে অনুযোগ আড়াল করতে পারেননি।

তিনি বলেন, “বাংলাদেশ টু কাতার ফ্লাইটের খরচ অনেক বেশি, এই খরচ কমিয়ে আনলে কাতার প্রবাসীরা কম খরচে দেশে যাতায়াত করতে পারতো!”

এছাড়া তিনি দেশের বিমানবন্দরগুলোতে প্রবাসীদের জন্য ই-গেট চালু করা ও ‘অহেতুক হয়রানি’ বন্ধের দাবি জানান।

কাতারের সব আপডেট পেতে যুক্ত হোন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে

দোহায় বাংলাদেশি পোশাক কারখানা ‘ডায়নামিক ফ্যাশন’-এ ব্যবস্থাপক পদে কাজ করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সৈয়দ মো. মাহবুব আলম। কাতারে ‘অস্বাভাবিক আবাসন ও অফিস ভাড়া’ কমিয়ে আনার দাবি তার।

মাহবুব বলেন, “দীর্ঘদিন কাতারে আছেন এমন অনেকেরই ইচ্ছে কাতারে পরিবারসহ বসবাস করার। কিন্তু কাতারে পরিবারের জন্য রেসিডেন্ট পারমিট পাওয়া অপেক্ষাকৃত কঠিন। ফলে ইচ্ছে থাকলেও অনেকেই এখানে পরিবার নিয়ে আসতে পারছেন না। এটির সমাধান জরুরি।”

দোহার একটি মুদ্রণ-সেবা দোকানের কর্মী চাঁদপুরের সালাউদ্দিন মজুমদার। তিনি বলেন, “কাতারের কর্মস্থলগুলোতে বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা একসঙ্গে কাজ করেন। কর্মস্থলে অনেকসময় নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশিদের সমান গুরুত্ব ও সুযোগ দেওয়া হয় না।” সালাউদ্দিন এ পরিস্থিতির পরিবর্তন চান।

প্রবাসীদের অভিযোগ, যেখানে কাতারে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও নেপালসহ বহুদেশ জনশক্তি রপ্তানি প্রক্রিয়া সহজ করেছে, সেখানে বাংলাদেশ ‘নিত্য-নতুন শর্ত ও বাড়তি নিয়ম-কানুন’ সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশিদের কাজের উদ্দেশ্যে কাতারে আসার পথ ‘দীর্ঘসূত্র ও কঠিন’ বলে মনে করেন তারা।

জনশক্তি ও কর্মসংস্থান ব্যুরোকে ‘আধুনিক, গতিময় ও কার্যকর’ করার দাবি জানান প্রবাসীরা। এছাড়া অনেকের কাছ থেকে বাংলাদেশে অবস্থিত কাতার ভিসা সেন্টারে কর্মীদেরকে ‘অযথা হয়রানি ও বাড়তি খরচ আদায়’ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কাতারের আমিরের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সফর শেষ হলেও প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে জল্পনা-কল্পনা, আশাবাদের কমতি নেই। প্রবাসীদের একটি বড় অংশ মনে করছেন, এই সফর কাতার-বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক মাত্রা নিয়ে আসবে। পাশাপাশি প্রবাসীদের সমস্যাগুলোর সমাধান হবে ও ভবিষ্যৎ টেকসই হবে।

BDNews

Loading...
,