সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা ‘নিষেধাজ্ঞা’: বড় ধাক্কা বাংলাদেশের শ্রমবাজারে

Loading...

সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) বাংলাদেশিদের ভিসা ইস্যু কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে, যা দেশের বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও পর্যটন খাতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে।

সম্প্রতি আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন)–এর সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়া বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্যরাও ভিসা জটিলতায় পড়েন।

কাতারের সব আপডেট হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে ক্লিক করুন

Loading...

দুজন সচিবসহ ২৭ সদস্যের ওই প্রতিনিধি দল প্রায় দুই মাস চেষ্টা করেও সময়মতো ভিসা পাননি। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপে শেষ মুহূর্তে ভিসা মেলে এবং তারা যাত্রা করতে সক্ষম হন।

একই ধরনের সমস্যা দেখা গেছে অন্যান্য ক্ষেত্রেও। কয়েকজন বাংলাদেশি অংশগ্রহণকারী দুবাই ফরেক্স এক্সপোতে ভিসা বিলম্বের কারণে অংশ নিতে পারেননি। জাতীয় দলের ক্রিকেটার সৌম্য সরকারও ইউএই ভিসা না পাওয়ায় একটি টি–টোয়েন্টি সিরিজ মিস করেন।

কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর

Loading...

২০২৪ সালের আগস্টের পর থেকেই বাংলাদেশিদের জন্য ইউএই ভিসা ইস্যু সীমিত হয়ে যায়। কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ওই সময়ের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর ইউএই বাংলাদেশিদের ভিসায় অনানুষ্ঠানিক বিধিনিষেধ আরোপ করে।

জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)–এর তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে মাত্র ৮ হাজার শ্রমিক আমিরাতে গেছেন। ২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে এ সংখ্যা ছিল ৪৭ হাজারের বেশি, আর ২০২৩ সালে প্রায় ৯৮ হাজার।

ফেসবুকে আমাদের সাথে থাকতে লাইক দিন এখানে

Loading...

ভিসা জটের কারণে ইউএই–ভিত্তিক ট্যুর অপারেটর ও এয়ারলাইনগুলোও ক্ষতির মুখে পড়েছে। টোয়াব পরিচালক তসলিম আমিন শোভন জানান, “২০২১ থেকে ২০২৪ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রতি বছর দুই হাজারের বেশি ভিসা প্রসেস করতাম। গত এক বছরে একটিও হয়নি।” আটাবের সাবেক মহাসচিব আব্দুস সালাম আরেফ বলেন, “পর্যটন ও ট্রানজিট ভিসা প্রায় শূন্য, শ্রম ভিসা আগের তুলনায় ৫ শতাংশে নেমে এসেছে।”

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, “আমরা বিষয়টি নিয়ে ইউএই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছি। তবে এটি তাদের নীতিগত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।”

Loading...

২ অক্টোবর ও ৫ অক্টোবর ইউএই দূতাবাসের কাছে আনুষ্ঠানিক মন্তব্য চাইলে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে, ২২ সেপ্টেম্বর আবুধাবিতে বাংলাদেশ দূতাবাস এক বিবৃতিতে জানায়, “২০২৬ সাল থেকে ইউএই বাংলাদেশিদের ভিসা নিষিদ্ধ করছে”—এমন খবর সঠিক নয়। তারা দাবি করে, ভিসা বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি। তবে বাস্তবে ভিসা প্রক্রিয়া প্রায় বন্ধ।

Loading...

বর্তমানে ইউএইতে প্রায় ১২ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক কর্মরত। ভারত ও পাকিস্তানের পর এটি বাংলাদেশি প্রবাসীদের তৃতীয় বৃহত্তম গন্তব্য। কিন্তু চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে ইউএইতে গেছেন মাত্র ১,৬০০ জন, যার অধিকাংশই দক্ষ বা আধা–দক্ষ পেশাজীবী।

কূটনৈতিক ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ইউএইতে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিক্ষোভ এবং ভিসা জালিয়াতির ঘটনা নিষেধাজ্ঞার কারণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Loading...

বাংলাদেশ সরকারের আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী জানিয়েছেন, ইউএই–এর অভিবাসন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন—আমিরাতে সব ধরনের ভিসা বা আবাসনবিধি লঙ্ঘনকারীর ২৫ শতাংশের বেশি বাংলাদেশি। ফলে যাচাই–বাছাই প্রক্রিয়ায় ইউএই আরও কঠোর হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে শ্রমবাজারের পাশাপাশি বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহেও প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন

Loading...

Loading