নির্ধারিত সময়ে চালু হচ্ছে না কক্সবাজার এয়ারপোর্টের আন্তর্জাতিক টার্মিনাল

Loading...

নির্ধারিত সময়ে চালু হচ্ছে না কক্সবাজার এয়ারপোর্টের আন্তর্জাতিক টার্মিনাল

কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার লক্ষ্য নিয়ে যে টার্মিনাল নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল, সেটি নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চলতি বছরের জুলাই মাসে টার্মিনাল চালুর পরিকল্পনা থাকলেও বাস্তবে তা সম্ভব হচ্ছে না। নতুন সময়সীমা অনুযায়ী, ডিসেম্বরের আগে আন্তর্জাতিক মানের যাত্রীসেবা চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই।

কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর

Loading...

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএবি) জানিয়েছে, টার্মিনালের নির্মাণ কাজ এখনো শেষ পর্যায়ে পৌঁছায়নি। অথচ আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর জন্য প্রস্তুতি নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে সংস্থাটি।

এতে তৈরি হচ্ছে উদ্বেগ। কারণ পর্যাপ্ত অবকাঠামো ছাড়া আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করলে যাত্রীসেবা ও নিরাপত্তা উভয়ই বিঘিœত হতে পারে।

কক্সবাজার আন্তর্জাতিক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের এক কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে বলেন, নির্মাণকাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। তবে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগবে।

কাতারের সব আপডেট হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে ক্লিক করুন

Loading...

বর্তমান টার্মিনালে যেখানে বছরে সর্বোচ্চ ৭.৩ লাখ যাত্রী পরিবহনের সক্ষমতা রয়েছে, সেখানে নতুন টার্মিনাল চালু হলে এ সংখ্যা ১৮ লাখে উন্নীত হবে। কিন্তু বর্তমানে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনাতেই প্রচণ্ড চাপ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

নতুন টার্মিনাল নির্মাণাধীন থাকায় বর্তমানে কক্সবাজার বিমানবন্দরে নেই যথাযথ কাস্টমস, ইমিগ্রেশন, নিরাপত্তা স্ক্যানিং ও যাত্রীপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করলে যাত্রীদের দুর্ভোগ এবং বিমান বন্দরের সুনাম উভয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, বর্তমান টার্মিনালে আন্তর্জাতিক মানের ইমিগ্রেশন, কাস্টমস এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্থাপনের মতো পর্যাপ্ত জায়গা নেই।

Loading...

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, অভ্যন্তরীণ টার্মিনাল ব্যবহার করেই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করা হবে এবং এর জন্য প্রস্তুতি চলছে। তবে বেসরকারি বিমান সংস্থাগুলো এ বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করছে।

নোভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ এভিয়েশন অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব মফিজুর রহমান বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় কোনো টার্মিনাল সুবিধা নেই, শুধু রানওয়ে ছাড়া।

তিনি আরো বলেন, টার্মিনালটি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনার জন্যও অপর্যাপ্ত। তাহলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট কিভাবে পরিচালিত হবে, তা স্পষ্ট নয়।

Loading...

তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, এর আগেও হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল আগেভাগেই উদ্বোধনের ফলে পুরোপুরি বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হতে দেরি হয়েছে, সেই একই ভুল যেন ফের না হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিমানবন্দরের বড় অর্জন হিসেবে ধরা হচ্ছে রানওয়ে সম্প্রসারণ প্রকল্প, যা প্রায় শেষ পর্যায়ে। বঙ্গোপসাগরের মধ্যে ১,৭০০ ফুট বাড়িয়ে রানওয়ের দৈর্ঘ হবে ১০,৭০০ ফুট (৩.২৬ কিমি), যা বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ রানওয়ে হবে।

আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার লক্ষ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে আন্তর্জাতিক গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। বর্তমানে বিমানই দেশের একমাত্র গ্রাউন্ড-হ্যান্ডলিং প্রদানকারী সংস্থা।

Loading...

বর্তমানে কক্সবাজারে অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান বাংলাদেশ, ইউএস-বাংলা, নোভোএয়ার ও এয়ার অ্যস্ট্রা ফ্লাইট পরিচালনা করছে। পর্যটন মৌসুমে এ ফ্লাইটগুলোতে ব্যাপক ভিড় লেগেই থাকে।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের পরিচালক মো: গোলাম মোর্তোজা হোসেন নয়া দিগন্তকে বলেন, বিদ্যমান টার্মিনালে ইমিগ্রেশন, কাস্টমস এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা প্রদানের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এজন্য আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করতে দেরি হচ্ছে।

তবে সরকারের সংশিষ্ট দফতরগুলো বিমান বন্দর পরিদর্শন করছেন। তারা দেখছেন একটি আন্তর্জাতিক মানের বিমান বন্দর প্রতিষ্ঠা করতে কী ধরনের ঘাটতি রয়েছে। এসব ঘাটতি দূর করতে ইতঃমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।

Loading...

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যটন নগরী কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিক গেটওয়ে হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও, পর্যাপ্ত অবকাঠামোগত প্রস্তুতি ছাড়া আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর উদ্যোগ ভবিষ্যতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পর্যাপ্ত পরিকল্পনা, জনবল, নিরাপত্তা ও যাত্রীসেবা নিশ্চিত করেই এ ধরনের উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন, যাতে দেশের বিমান চলাচল খাত আরো দক্ষ ও বিশ্বমানের হতে পারে।

আরও পড়ুন

দৈনিক নয়া দিগন্ত

Loading...

Loading