ফ্লাইট অবতরণের পর শুরু হয় ‘ট্রলি যুদ্ধ’

Loading...

শাহজালাল বিমানবন্দরে চরম সংকট, যাত্রীদের ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ট্রলি সংকট এখন চরম আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিন গড়ে ২৫ হাজারের বেশি যাত্রী এ বিমানবন্দর ব্যবহার করলেও সেবায় নিয়োজিত ট্রলির সংখ্যা মাত্র সাড়ে তিন হাজার।

ফলে একসঙ্গে একাধিক আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরণ করলেই দেখা দিচ্ছে ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা, ধাক্কাধাক্কি এমনকি হাতাহাতির ঘটনাও।

কাতারের সব আপডেট হোয়াটসঅ্যাপে পেতে এখানে ক্লিক করুন

Loading...

এক সকালে বিশৃঙ্খলার চিত্র

গত বুধবার (১ অক্টোবর) ভোরে এমনই এক দৃশ্য দেখা যায় শাহজালাল বিমানবন্দরে। প্রবল ঝড়-বৃষ্টির কারণে আকাশে চক্কর দেওয়া পাঁচটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট একে একে অবতরণ করে ভোর ৪টার পর। ইমিগ্রেশন শেষে যাত্রীরা লাগেজ নিতে গেলে দেখা দেয় ট্রলি সংকট।

৫ নম্বর লাগেজ বেল্টের সামনে শত শত যাত্রী লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ট্রলির আশায়। সকাল ৬টা ৯ মিনিটে যখন প্রায় ২০–২৫টি ট্রলি আনা হয়, তখন শুরু হয় টানাটানি, ধাক্কাধাক্কি, চিৎকার-চেঁচামেচি। নিরাপত্তাকর্মীদের হিমশিম খেতে হয় বিশৃঙ্খলা সামাল দিতে।

কাতারে বিভিন্ন কোম্পানিতে নতুন চাকরির খবর

Loading...

যাত্রীদের ক্ষোভ

প্রবাসী রুবেল বলেন, “সারারাত ভ্রমণ শেষে দেশে নেমেই ট্রলির জন্য আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হলো। মানুষ মারামারি করছে—এভাবে একটা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চলতে পারে না।”

আরেক যাত্রী নোয়াখালীর ইউসুফ বলেন, “বয়স্করা সবচেয়ে বেশি কষ্টে পড়েন। কখনও ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয় ট্রলির জন্য।”

ফেসবুকে আমাদের সাথে থাকতে লাইক দিন এখানে

Loading...

ট্রলিতে বের হতেও ভোগান্তি

শুধু ট্রলি পাওয়া নয়, লাগেজসহ বিমানবন্দরের বাইরে যেতেও পড়তে হচ্ছে বিড়ম্বনায়। টার্মিনাল–১ ও ২ এর ক্যানোপি অংশে ট্রলি বের হওয়ার পথ দেড় ফুট উঁচু স্টিলের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফলে যাত্রীদের অনেক সময় কাঁধে বা মাথায় ব্যাগ তুলে নিতে হচ্ছে।

সৌদি প্রবাসী আবুল বাসার বলেন, “সারারাত জার্নির পর শরীর ক্লান্ত, তার ওপর ট্রলি নিয়ে বের হতে না পারা ভয়াবহ কষ্টের। এটি যাত্রীদের প্রতি চরম অবহেলা।”

Loading...

কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা

বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) জানিয়েছে, বিমানবন্দরে বর্তমানে প্রায় ৩,৬০০ ট্রলি আছে। তবে একসঙ্গে একাধিক ফ্লাইট অবতরণ করলে চাহিদা হঠাৎ বেড়ে যায়।

শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এস. এম. রাগীব সামাদ বলেন,
“দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কখনও একই সময়ে অনেক ফ্লাইট নামলে ট্রলির চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ফলে সাময়িকভাবে সংকট দেখা দেয়। ইতোমধ্যে আরও পাঁচ শতাধিক নতুন ট্রলি সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তৃতীয় টার্মিনাল চালু হলে এই সমস্যা অনেকটাই কমে আসবে।”

Loading...

দীর্ঘদিনের সমস্যা, সমাধান কবে?

শাহজালাল বিমানবন্দরে ট্রলি সংকট ও যাত্রী ভোগান্তি দীর্ঘদিনের পুরনো সমস্যা। একাধিক প্রশাসনিক উদ্যোগের পরও সেবার মানে তেমন উন্নতি হয়নি।

যাত্রীদের প্রত্যাশা—দ্রুত সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে এ অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার অবসান ঘটাবে কর্তৃপক্ষ, যাতে দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি সত্যিকার অর্থে “আন্তর্জাতিক মানের” সেবার প্রতীক হয়ে উঠতে পারে।

আরো পড়ুন

Loading...

Loading